বীর নারায়ণ সিং
|
shaheed veer narayan singh |
অষ্টাদশ শতাব্দীতে ভারতীয়দের উপর ইংরেজদের অত্যাচার যখন চরম সীমায় , সেই সময় ছত্রিশগড়ের এক আদিবাসী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন নারায়ণ সিং, যিনি ছত্রিশগড় রাজ্যের প্রথম স্বাধীনতা সংগ্রামী হিসেবে পরিচিত। নারায়ণ সিং এর জন্ম 1795 সালে। ছত্রিশগড়ের সোনাখান(বর্তমান District - Bolodabazar) জমিদার পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন নারায়ণ সিং। রামরায় ছিলেন নারায়ণ সিং এর পিতা। রামরায় ছিলেন আদিবাসী সম্প্রদায়ের বিজবাড় জাতির অন্তর্গত। নারায়ণ সিং ছোটো থেকে খুব সাহসি এবং বুদ্ধিমান ছিলেন। বাবার মৃত্যুর পর পুরুষতান্ত্রিক সমাজের নিয়ম অনুসারে 1830 সালে নারায়ণ সিং জমিদার হন। কথিত আছে যে, নারায়ণ সিং এর একটি প্রিয় প্রভু ভক্ত ঘোড়া ছিলো, ওই ঘোড়াতে চেপে তিনি এলাকার দেখাশোনা করতেন। নারায়ণ সিং এতটাই সাহাসি ছিলেন যে , জঙ্গলে লুকিয়ে থাকা নরভক্সী হিংস্র বাঘকে 🐅 নিজের তরোয়াল এর দ্বারা হত্যা করেন। তার এই দুর্গম সাহসিকতার জন্য ইংরেজরা তাঁকে " বীর " উপাধি প্রদান করেন।
ভারতবর্ষে যখন ইংরেজদের একাংশ রাজ ছিল, তখন তাঁরা তাঁদের নিজের ইচ্ছা মত গরীব মানুষদের উপর কর চাপাতে থাকে ।এই কর এর বিরুদ্ধে নারায়ণ সিং প্রথম আওয়াজ তুলেছিলেন। এইজন্য রায়পুরের ডেপুটি কমিশনার ইলিয়ট সাহেবের(Charles C. Elliot)সঙ্গে তাঁর শত্রুতা তৈরী হয় ।
|
Chhattisgarh |
1856 সালে ছত্তিশগড়ে এমন এক বিপর্যয় নেমে এসেছিলো যার ফলস্বরুপ চারিদিকে হাহাকার ও আকালে মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছিল। এমন এক পরিস্থিতিতে নারায়ণ সিং এর রাজস্ব ভান্ডার শেষের মাথায় । তখন মাখন সিং নামে এক ব্যবসায়ীর কাছে ভরপুর আনাজ এর ভান্ডার ছিল।ছত্রিশগড়ে আকাল পরিস্থিতিতে মাখন সিং বেশি লাভের আশায় তার গুদামঘর বন্ধ করে রেখেছিল। বীর নারায়ণ সিং মাখন সিং এর কাছে অনুরোধ করেন এই বিপর্যয়ের সময় আনাজের গুদামঘর খুলে দিতে। মাখন সিং এই অনুরোধ রক্ষা করেননি। শেষ পর্যন্ত বীর নারায়ণ সিং কোন পথ না পেয়ে বাধ্য হয়ে মাখন সিং এর গুদামঘর লুট করেন এবং গরীব মানুষদের মধ্যে বিলিয়ে দেন।
মাখন সিং এই কথা রায়পুরের ডেপুটি কমিশনার ইলিয়াড সাহেবকে জানান। এই অপরাধের জন্য বীর নারায়ণ সিং কে 24 অক্টোবর 1856 সালের সম্বলপুর থেকে গ্রেপ্তার করে রায়পুর জেলে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। তিনি যখন জেলে ছিলেন তখন তাঁর প্রজারা স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রধান নেতা হিসেবে বেছে নেন বীর নারায়ণ সিং কে । কিছু দেশ ভক্তদের দ্বারা নারায়ণ সিং জেল থেকে মুক্তি পান।জেল থেকে মুক্তি পেয়ে নারায়ণ সিং 500 জনকে নিয়ে এক সেনাবাহিনী গঠন করেন। 20 আগস্ট 1857 সালে সোনাখানে, বীর নারায়ণ সিং নেতৃত্বে তার গঠিত সেনাবাহিনী ইংরেজদের বিরুদ্ধে প্রথম বিদ্রোহ ঘোষণা করে।
|
Charles C. Elliot, the first deputy commissioner of Chhattisgarh—1855 AD  |
তখন রায়পুরের ডেপুটি কমিশনার ইলিয়াট সাহেব স্মীত নামে এক সেনাপতিকে আদেশ দেন এই বিদ্রোহ দমন করার জন্য।বীর নারায়ণ সিং এর নেতৃত্বে ধীরে ধীরে বিদ্রোহ বিশাল আকার ধারণ করতে থাকে।ইংরেজদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহে খুশি ছিলেন না আশেপাশের জমিদাররা। এদিকে বীর নারায়ন সিং এর সাথে ইংরেজদের যুদ্ধ হতে থাকে।কিছু বিশ্বাসঘাতক জমিদারদের জন্য নারায়ণ সিং কে ইংরেজদের হাতে গ্রেপ্তার হতে হয়। ইংরেজদের বিচারব্যবস্থা অনুসারে নারায়ণ সিং কে রাজদ্রোহী হিসেবে ফাঁসির সাজা দেওয়া হয় এবং 10 ডিসেম্বর 1857 সালে রায়পুরে প্রকাশ্যে ফাঁসি দেওয়া হয়।
|
Shaheed Veer Narayan Singh International Cricket Stadium |
This Article based on my internet & research
Post a Comment