নারায়ণ সরেন "তোড়ে সুতৗম " (Narayan Soren "Tore Sutam")
নারায়ণ সরেন "তোড়ে সুতৗম " |
সাঁওতাল সাহিত্যের প্রথম সরকারী পেনসন প্রাপ্ত সাহিত্যিক হলেন পেতেন নারায়ণ সরেন ‘তোড়ে সুতৗম' । নারায়ণ সরেন ‘তোড়ে সুতৗম' এর জন্ম 28 অক্টোবর 1923
সালে , সাঁওতাল পরগণার ছোট আসিলা গ্রামে।
বর্তমানে এটি ঝাড়খণ্ডের সাহেবগঞ্জ জেলায় অন্তর্ভুক্ত। তাঁর পিতার নাম রঘুবীর
সরেন। মাতার নাম সীতা সরেন (হেমব্রম)। নারায়ণ
সরেনের বিদ্যালয় জীবন কাটে গ্রামের স্কুল
পাকুড়ে তে। 1942 সালে ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষায়
উত্তীর্ণ হয়ে কলেজে ভর্তি হন। কলেজে
পড়াশোনা শেষ করে শুরু হয় কর্ম জীবন। 1948 থেকে 1952 সাল পর্যন্ত Supply Inspector পদে সরকারী চাকুরী করেন। রাজনীতি
করার জন্য তিনি চাকরি ছেড়ে দেন , পরবর্তী কালে 1956 সালে
উধওয়ানালা হাইস্কুলে শিক্ষকতা শুরু করেন। 1962 সাল পর্যন্ত শিক্ষকতা করার
পর আবার সক্রিয় রাজনীতিতে যোগ দেন। 1962 থেকে 1968 সাল পর্যন্ত বিহার বিধান পরিষদের সদস্য
হিসেবে মনোনীত হন।
তিনি
সাঁওতালি কাব্যজগতে প্রথম আবির্ভাবেই পাঠক মহলে অভূতপূর্ব সাড়া জাগান। একের পর এক
অজস্র কবিতা, গল্প সৃষ্টি করেন। বলাবাহুল্য, কবিতা-গল্প-নাটক সর্বক্ষেত্রেই ছিল
তাঁর অবাধ যাতায়াত। পঞ্চাশ দশক এবং তার পরবর্তী সময়ের বহু পত্রপত্রিকায় তাঁর
অসংখ্য রচনা প্রকাশিত হয়। তাঁর প্রকাশিত সব গ্রন্থই স্কুল-কলেজের সিলেবাসে
অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বহু গ্রন্থের পাণ্ডুলিপি অপ্রকাশিত রয়ে গেছে এখনও। কবি
হিসেবে পরিচিত হওয়া সত্ত্বেও গল্প, উপন্যাস, নাটক, প্রবন্ধ ইত্যাদি রচনা করে সাঁওতালি সাহিত্যকে বিশেষভাবে সমৃদ্ধ
করেছেন।
তিনি শুধু সাঁওতালি সাহিত্য নিয়ে চর্চা করেন নি , হিন্দীতেও তাঁর কাব্য রচনা প্রকাশিত হয়। তাঁর সাহিত্যিক অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ তাঁকে বহু পুরস্কার ও সম্মানে ভূষিত করা হয়।
(1) 1973 সালে বিহার সরকার তাঁকে হিন্দী সেবা পুরস্কার প্রদান করেন। সাঁওতালি সাহিত্য সেবার জন্য নারায়ণ সরেনকে বিক্রমশীলা হিন্দী বিদ্যাপীঠ থেকে “কবিরত্ন” উপাধি প্রদান করা হয়।
(2) 1987 সালে বিহার সরকার আবার তাঁকে জনজাতীয়
পুরস্কার দেন।
(3) 1988 সালে সান্তালি সাহিত্য পরিষদ, কড়হলবিল শাখা, দুমকা থেকে তাঁকে “বাচস্পতি” উপাধি প্রদান করা হয়।
(4) 1973 সাল থেকে বিহার সরকারের আনুকূল্যে
সাহিত্য সেবার জন্য মাসিক ৩০০ টাকা করে পেনসন পেতেন।
কিন্তু 1976 সালে হঠাৎ পক্ষাঘাতে
(ইংরেজি:Paralysis) একপ্রকার দৈহিক বিকার যাতে মাংশপেশী
স্বাভাবিক কাজ করার বদলে দুর্বল বা শিথিল (অথবা প্রকারভেদে আড়ষ্ট) হয়ে থাকে। এতে
অঙ্গ প্রত্যঙ্গ অচল হয়ে পঙ্গুত্ব হতে পারে। পক্ষাঘাত একটি দুটি পেশীতে হতে পারে, এক বা একাধিক অঙ্গে হরে পারে বা পুরো
শরীরে হতে পারে। অনেক সময়ই পক্ষাঘাতের সঙ্গে অবশতা অর্থাৎ স্পর্শ অনুভূতির অভাব
হতে পারে, কিন্তু সবসময় নয়। পক্ষাঘাত
স্বল্পস্থায়ী হতে পারে অথবা দীর্ঘমেয়াদী হতে পারে। পক্ষাঘাত অন্য রোগের উপসর্গ
অথবা একাই একটি ভয়াবহ রোগ হিসাবে হতে পারে, আবার পক্ষাঘাত খুব মৃদু এবং স্বল্পমেয়াদী হতে পারে যা আমরা প্রায়
টেরও না পেতে পারি। দেখা গেছে গড়ে পঞ্চাশ জনের মধ্যে একজনের অল্পবিস্তর পক্ষাঘাত
আছে। )আক্রান্ত হন। তারপর থেকেই তিনি
শারীরিক ভাবে দুর্বল হয়ে পড়েন।1987
সাল নাগাদ তাঁর দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ হতে থাকায় তাঁর কলমও চিরতরে থেমে যায়।
1988 সালের 12ই আগস্ট মহান সাহিত্যিক পরলোকগমন করেন।
"নারায়ণ সরেন ‘তোড়ে
সুতৗম”-এর প্রকাশিত ও অপ্রকাশিত গ্রন্থতালিকা
:
(1) “গিরৗ” প্রকাশিত হয় 1954
(2) “আসাড় বিনতি”। এটি তাঁর দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ।
প্রকাশিত হয় 1977 সালে।
(3) তৃতীয় কাব্যগ্রন্থের নাম “কিরতৗন কীলী”। প্রকাশিত হয় 1981 সালে।
(4) “মায়াজাল” প্রকাশিত সাল জানা যায় নি ।
(5) “ডাহার ধুড়ি” প্রকাশিত সাল জানা যায় নি ।
(6) “চুরুচ চাওলে” এটিও অপ্রকাশিত গল্পগ্রন্থ।
(7) “উফৗদিয়ৗ”। অপ্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ।
(8) “উরনি সেংগেল” (অরণ্যবহ্নি)। অপ্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ
Post a Comment